________________
প্রাকৃত সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
অধ্যাপক শ্রীসত্যরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রাকৃতভাষায় যে সব গ্রন্থ রচিত হয়েছে, সেগুলি নিয়েই প্রাকৃত সাহিত্য । খ্ৰীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ বা পঞ্চম শতাব্দী হ'তে যখন বর্ধমান মহাবীর ও গৌতমবুদ্ধ তৎকালের প্রচলিত সাধারণের কথ্য ভাষায় ধর্মপ্রচার করতে লাগলেন, তখন থেকেই প্রাকৃত সাহিত্যের আরম্ভ বলা যায়। আসলে অশোকের অনুশাসনাবলীতে এবং অশোকের পরবর্তী কালে তাম্রপট্টে ও শিলাখণ্ডে উৎকীর্ণ প্রত্বলিপিতে এবং হীনযান বৌদ্ধদের পালিতে রচিত গ্রন্থে প্রাকৃত সাহিত্যের প্রথম প্রকাশ ৷ এখানে পালি সাহিত্যকে বাদ দেওয়া হচ্ছে, যদিও ব্যাপকদৃষ্টিতে পালিও একটি প্রাকৃত ভাষাই। জৈন আগম সাহিত্যে, সংস্কৃত নাটকে (সংস্কৃতাংশ বাদ দিয়ে ), সেতুবন্ধ, গৌড়বহ, কুমারপালচরিত, গাথাসগুণতী প্রভৃতি কাব্যে প্রাকৃত সাহিত্যের যথার্থ নিদর্শন পেয়ে থাকি । এই 'প্রাকৃত সাহিত্য' খ্ৰীষ্টপূৰ্ব ষষ্ঠ বা পঞ্চম শতাব্দী হতে চতুর্দশ বা পঞ্চদশ খ্ৰীষ্টাব্দ পর্যন্ত বহু শাখা-প্রশাখায় বিস্তারিত হ'য়ে সংস্কৃত সাহিত্যের প্রতিযোগিরূপে বিরাজমান ছিল। এখানে প্রাকৃত সাহিত্যের একটু পরিচয় দেবার চেষ্টা করছি।
জৈন আগম সাহিত্য
প্রাকৃত সাহিত্যের প্রথম পরিচয় পাই জৈনদের ধর্মগ্রন্থে। মহাবীর মুখনিঃসৃত মধুর বাণী তাঁর শিশু ও গণধরগণ কর্তৃক লিপিবদ্ধ হওয়ার ফলে, এই ‘জৈন আগম সাহিত্যের' উৎপত্তি। এই জৈন সাহিত্যকে সাধারণত: ‘সিদ্ধান্ত’ বা 'আগম' বলা হয় । এর রচনা কাল সম্ভবতঃ খ্ৰীষ্টাব্দ প্রথম শতকে । কারো মতে তৎপূর্বে, কারো মতে তৎপরে ।
জৈনরা প্রধানতঃ দুই সম্প্রদায়ে বিভক্ত : শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর। সেজন্য তাদের ধর্মগ্রন্থ একটু ভিন্ন প্রকারের, যদিও মূলতঃ উৎপত্তিস্থল এক ।
শ্বেতাম্বর জৈনদের মতে দ্বাদশ অঙ্গ গ্রন্থ 'দৃষ্টিবাদ' লুপ্ত আর দিগম্বরেরা