________________
জিনচরিত্র
১৫৫
ছিল সেইকালে ] মধ্যরাত্রসময়ে চিত্রানক্ষত্রের [ সহিত চন্দ্রের ] যোগে সুস্থ-দেহা শিবা দেবীর পুত্রসন্তানরূপে সুস্থদেহে প্ৰস্থত হন ৷৷
জন্মকথা সমুদ্র বিজয়ের নাম দিয়া বলিয়া যাইতে হইবে... [ পরিশিষ্ট ঘ ]...যাবৎ...সুতরাং এই কুমার নামে অরিষ্টনেমি হউক ৷৷
অর্হৎ অরিষ্টনেমি দক্ষ, দক্ষপ্রতিজ্ঞ, আদর্শ রূপবান্, কূর্মবৎ আত্মগুপ্ত, সুলক্ষণ, বিনীত হইয়া......মাতাপিতার দেবত্বপ্রাপ্তি হইলে গুরুজন ও মহৎ ব্যক্তিগণের অনুমতি লইয়া স্বপ্রতিজ্ঞা সমাপ্ত করেন [ অর্থাৎ পূর্বপ্রতিজ্ঞারূপ অনাগারিত্ব প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেন ] । আবার প্রচলিত আচার অনুসারে লোকাস্তিক দেবগণ সেই ইষ্ট, কান্তু, প্রিয়, মনোজ্ঞ, মনোরম, উদার, কল্যাণকর, শুভ, ধন্য, মঙ্গলাকর, মিত-মধুরশোভন, অপুনরুক্ত বাক্যে অনবরত অভিনন্দন করিতে করিতে ও স্তব করিতে করিতে এই কথা বলিলেন।
জয় জয় হে নন্দক ! জয় জয় হে ভদ্ৰক ! তোমার ভদ্র হউক, হে ক্ষত্রিয়-বর-বৃষভ ! জাগরিত হও হে ভগবন্ লোকনাথ ! সকল জগজজীবের হিতকর ধর্মতীর্থ প্রবর্তন কর। ইহা সর্ব লোকে সর্ব জীবের শ্রেষ্ঠ হিতকর, সুখকর ও নিঃশ্রেয়সকর হইবে । এই বলিয়া তাঁহারা জয়-জয়-ধ্বনি করিতে লাগিলেন ।
অহং অরিষ্টনেমি মনুষ্যধর্মসুলভ গার্হস্থ্য ধর্ম গ্রহণ ( অর্থাৎ বিবাহ করিবার পূর্বেও তাঁহার অনুত্তর অপ্রতিপাতী আভোগিক জ্ঞানদর্শন ছিল ৷ সেইজন্য তখন অর্হৎ অরিষ্টনেমি সেই অনুত্তর আভোগিক জ্ঞানদর্শনবলে, আপন নিষ্ক্রমণ-কাল দেখিতে পাইয়াছিলেন। দেখিতে পাইয়া তিনি তাঁহার সমস্ত হিরণ্য ত্যাগ করিয়াছিলেন, সুবর্ণ ত্যাগ করিয়াছিলেন, ধন ত্যাগ করিয়াছিলেন, ধান্য ত্যাগ করিয়াছিলেন, রাজ্যত্যাগ, রাষ্ট্রত্যাগ, বলত্যাগ, বাহনত্যাগ, কোষত্যাগ, কোষ্ঠাগারত্যাগ, পুরত্যাগ, অন্তঃপুরত্যাগ ও জনপদত্যাগ করিয়াছিলেন। কনক, রত্ন, মণি, মৌক্তিক, শঙ্খ, শিলা, প্রবাল, রক্তরত্নাদি সমস্ত সারধন ত্যাগ করিয়া, অবজ্ঞা করিয়া দাতৃগণের সাহায্যে বিলাইয়া দিয়াছিলেন এবং দায়গ্রস্ত (দরিদ্র) দিগের মধ্যে দান করিয়াবিলাইয়াছিলেন ৷ ১৭২ ॥
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org