________________
জিনচরিত্র বেড়ায়। সরােবরটি যেমন বড় তেমনি উজ্জ্বল। কমল, কুবলয়, উৎপল, তামস ও পুণ্ডরীক (জৈনদিগের মতে এই পাঁচটি পৃথক পৃথক্ ফুলের নাম।) লীলাভরে দুলিতেছে ও ঐ সকল বহুবিধ পুষ্পের সমাগমে সরােবরটি রমণীয় ও শোভাময় হইয়াছে। তাহার মধ্যে ভ্রমরগণ ও মত্ত মধুকরীগণ কমলে কমলে মধুলেহন করিয়া ঝাঁকে ঝাঁকে উড়িতেছে। সরােবরের জলে রাজহংস, বক, চক্রবাক, কলহংস, সারস প্রভৃতি অসংখ্য জলচর পক্ষী মিথুনে মিথুনে গর্বভরে ক্রীড়া করিয়া বিচরণ করিতেছে। পদ্মিনীপত্রে লগ্ন জলবিন্দুনিচয় বিচিত্র আকার ধারণ করিয়াছে ॥ ৪২।
১১। তারপর শচন্দ্র-সৌম্য-বদনা [ ত্রিশলা ] ক্ষীরােদ সাগর দেখিলেন। চন্দ্রকিরণ-রাশিতুল্য সম্পন্ন তাহার বক্ষঃস্থলের শােভা। তাহার জলরাশি স্ফীত হইয়া চতুর্দিকে গমন করিতেছে। চপল, চঞ্চল, অত্যুচ্চ-প্রমাণ কল্লোলে সে জল লােলায়মান। পটু পবনে সঞ্চালিত রঙ্গভরে ক্রীড়াশীল অতি প্রকট তরঙ্গসমূহ ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে ও ক্ষুব্ধ হইয়া শােভা পাইতেছে ; আবার নির্মল ও উৎকট উৰ্মিসমূহের উত্থানপতনে সাগর ঝক্ঝক্ করিয়া রমণীয়দর্শন হইতেছে। মহামকর, বৃহৎ মৎস্য, তিমি, তিমিংগিল, নিরুদ্ধ ও তিলিতিলিক নামক জলজন্তুগণের আলােড়নে সে জলে কপূরবৎ শুভ্র ফেন উদ্গত ও প্রসারিত হইতেছে। বড় বড় নদী ত্বরিতবেগে আসিয়া সেখানে সাগরে মিলিতেছে সেখানে গঙ্গাবত (অর্থাৎ ঘূর্ণিপাক ) উৎপন্ন হইতেছে, সেখানে জলরাশি ব্যাকুলভাবে উঠিয়া পড়িয়া চক্রাকারে ঘুরিয়া ফিরিয়া লােলায়মান হইয়া খেলিতেছে । ৪৩।
| ১২। তারপর ত্রিশলা শ্বেতবর্ণ শুভ্রোজ্জ্বল মুরশ্রেষ্ঠগণের অভিকাম্য সর্বদা আনন্দ ও উপভােগের ধামস্বরূপ, নিত্যালােক, সর্বশ্রেষ্ঠ পুণ্ডরীকতুল্য বিমান ( অর্থাৎ দেবধাম) দেখিলেন। তাহার প্রভা তরুণ সূর্যমণ্ডলের প্রভার ন্যায়। তাহার অষ্টাধিক সহস্র শ্রেষ্ঠ স্তম্ভ উত্তম কাঞ্চনে নির্মিত এবং মহামণিসমূহে খচিত, দেখিলে আকাশে দীপ্যমান প্রদীপ বলিয়া মনে হয়। তাহার কনকপত্ৰসমূহে ঝকঝকে মুক্তা ঝুলিতেছে।
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org