________________
॥ এই যুগে ঋষিগণের নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দেবতা নির্বাচনের জন্য যেন একটা প্রবল চঞ্চলতা পরিলক্ষিত হয়। সম্প্রদায় ভেদে একেশ্বরবাদিত্বের এইটিই পূর্বলক্ষণ। সম্প্রদায় ভেদে নির্বাচনের ফলে ‘পুরুষ দেবতা, ‘বিশ্বকম দেবতা, ‘রুদ্র দেবতা” প্রভৃতি বহু নূতন দেবতার স্তোত্র বৈদিক মন্ত্রসংহিতায় স্থান পাইয়াছে। সৃষ্টিতত্ত্ব বিষয়ে অভিনব দার্শনিক বা অর্ধদার্শনিক মত আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। ঋগবেদীয় নাসদীয় সূক্তে (১০১২৯) নূতন দার্শনিক মতের আভাস সুপরিস্ফুট হইয়াছে। • জগৎ-সৃষ্টির পূর্বকালে ‘সৎ' ছিল না, ‘অসৎও ছিল না। ‘অন্তরীক্ষ ছিল না, ‘আকাশ’ও ছিল না। এই প্রপঞ্চ জগতের আবরণ, আশ্রয় বা আধার কি ছিল ? অতলস্পর্শ জলরাশিই কি ছিল? মৃত্যু ছিল না, অমৃতও ছিল না। দিন ও রাত্রির মধ্যে কোনও প্রভেদ ছিল না। এই সব ‘ছিল-না’র মধ্যে তিনি ছিলেন,—নিজেই নিজের অবলম্বন ও আশ্রয়। তিনি ব্যতীত আর কিছুই ছিল না। তাহার উপরে কিছুই ছিল না। অন্ধকার অন্ধকারেতেই আচ্ছন্ন ছিল। জল ও স্থলে কোনও পার্থক্য বা ব্যবধান ছিল না। শূন্য ও অভাবের মধ্যে যিনি প্রচ্ছন্ন ছিলেন, তিনিই তপঃপ্রভাবে স্বয়ংপ্রকাশ হইয়া আবিভূত হইলেন। তাঁহার মধ্যে সর্বপ্রথমে ইচ্ছা জাগরিত হইল, সেই ইচ্ছাতেই মুনিগণের অনুসন্ধিৎসা জাগরিত হইয়াছে। তাহারা বুঝিতে পারিয়াছেন যে শূন্যের মধ্যেই সবস্তুর বীজ নিহিত রহিয়াছে। তখন সেই অব্যক্ত তত্ত্বদর্শনের পথে আলােকপাত হইল এবং বীজ ও শক্তি উদ্ভূত হইল। নিম্নে আত্মশক্তি ও উদ্ধে ইচ্ছাশক্তি প্রকটিত হইল। কিন্তু কে জানে এই সৃষ্টিরহস্য ? দেবতারা নিশ্চয় সৃষ্টির পরে আবিভূত হইয়াছেন।
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org