________________
8€
প্রব্রজ্যা
সেকথা শুনে সুভদ্রার রাগ হল। বলল, তবে ঘরে বসে থাকলেই কি কেউ তোমাকে এসে পায়ে ধরে অর্থ দিয়ে যাবে ?
না, তা যাবে না। তাই শেষপর্যন্ত সে গিয়েছিল বারাণসী । অর্থও পেয়েছিল। কিন্তু যখন সে দেশে ফিরে এল তখন তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে, সন্তানেরও। স্মৃতিকা রোগে তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল।
গোভদ্র তখন সংসারে বিরক্ত হয়ে শ্রমণ হয়ে গেল ।
তারপর অনেক দিন পরের কথা। সেদিন তিন দিনের উপবাসের পর সে ভিক্ষা নিয়ে শিষ্যসহ উপাশ্রয়ে ফিরে আসছিল। প্রমাদশে হোক বা অনবধানতার জন্য তার পায়ের তলায় একটি ব্যাঙ কেমন করে এসে মরে গেল। সেদিকে সে লক্ষ্য করেও করল না। শিষ্য সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রতিক্রমণ করতে বললে, সে প্রতিক্রমণ না করে ক্রুদ্ধ হয়ে পথের ধারে পড়ে থাকা মরা অন্য ব্যাঙেদের দিকে দেখিয়ে শিষ্যকে বলল, বল, তবে এসব ব্যাঙও আমিই মেরেছি।
শিষ্য ভৎসিত হয়ে তখনকার মত চুপ করে গেল । ভাবল সন্ধ্যাবেলায় তার গুরু প্রতিদিনের নিয়মিত প্রতিক্রমণের সময় অনবধানকৃত এই পাপেরও আলোচনা করে নেবেন ।
সন্ধ্যাবেলাতেও যখন সে এই পাপের প্রতিক্রমণ করল না এবং শিষ্য যখন সেকথা আর একবার মনে করিয়ে দিল তখন সে আরও ক্রুদ্ধ হয়ে উঠল ও শিষ্যকে মারবার জন্য ষষ্টি নিয়ে তার পেছনে তাড়া করল। ক্রোধে অন্ধ হওয়ায় সামনের পাথরের থাম তার চোখে পড়ল না । সেই থামের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সে মাটিতে পড়ে গেল। মাথায় গুরুতর আঘাত লাগায় সেইখানেই তার মৃত্যু হল। মরার সময় তার মনে ক্রোধ ছিল তাই পরজন্মে সে কোপন স্বভাৰ নিয়েই জন্ম গ্রহণ করল ।
কৌশিক জন্মেও তার অপঘাতে মৃত্যু হয়েছিল। সেও এক কাহিনী । কৌশিক সেদিন গভীর বনে কাঠ কাটতে গেছে । তার অনুপস্থিতিতে সেদিন তার তপোবনে শ্বেতাম্বীর রাজপুত্ররা এসেছে। তার সেদিন সমস্ত দিন তার তপোবনে গাছের ফুল ছিঁড়ে খেলা করেছে ।