________________
পূর্বাশ্রম
দু’বছর। আচ্ছা তাই। তবে আমার অঙ্গ কিছু আরম্ভ সমান্ত কমে না।
তার মানে সর্বান্ত-পরিত্যাগী হল বর্ধমান। সংবয় আর নির্জয়া।
সংবর নূতন কর্মপ্রবাহকে নিরােধ করা, নির্জয়া জন্মজন্মার্জিত কর্মমল ক্ষয় করা। বর্ধমান যেমন নূতন কর্মপ্রবাহকে নিরােধ করবে তেমনি ক্ষয় করবে পূর্ব পূর্ব জমার্কিত কর্মকে।
বর্ধমানের আহারে বিহারে সংযম হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত সে ব্রহ্মচর্যে। এ সামান্য ব্রহ্মচর্য নয়, এ সর্বদা সর্বথ ব্রহ্মচর্য—শুধু মাত্র আত্মাতেই স্থিতি। চারদিকে যে রূপ ও রসের প্রলােভন ছড়ানাে কোনােটাতেই তার মন নেই। কর্মজঃ কি করে তাই তাকে লিপ্ত করবে ? | তাই দানে যেমন অভয় দান, ধ্যানে পরম শুরু ধ্যান, জ্ঞানে পরম কেবল জ্ঞান, লোয় পরম শুরু বেশ্যা, তেমনি নিয়মে এই ব্রহ্মচর্য । পরম বিশুদ্ধি, নির্মম নির্মলতা।
যঃ ন সঞ্চই কিঞ্চন। যে কিছুই সঞ্চয় করে না।
তার দুঃখ নেই যার মােহ নেই। তার মােহ নেই বার তৃষ্ণা নেই, তার তৃষ্ণা নেই যার লােভ নেই। তার লােভ নেই যে অকিঞ্চন।
যে অকিঞ্চন সে কিছু সঞ্চয় করে না। তাই তার পরিগ্রহ কোথায় ?
এই অকিঞ্চন হবার জন্য বর্ধমান নিজের বলে যা কিছু ছিল সব দান করে দিল। বসন, ভূষণ, রত্ন, অলঙ্কার, ধন, ভূমি সৰ। শেষে এক বছর বর্ধমান কল্পতরু হয়ে সে সমস্ত দান করল।
তারপর অগ্রহায়ণ মাস এল। এল অগ্রহায়ণ মাসের বহু প্রতীক্ষিত কৃষ্ণা দশমী। অভিনিমণের সঙ্কল্প নিয়ে দিনের তৃতীয় এহয়ে চন্দ্র পাকাতে করে বেরিয়ে এল বর্ধমান রাজভবন হতে। সঙ্গে এল যত আত্মীয়-বন, চতুর সেনা ও পৌরজন।